কিভাবে যাবেন দামতুয়া ঝরণা । দুটো দিন ছুটি পেয়েছেন, হাতে কিছু টাকাও আছে, কোথায় যেতেও ইচ্ছে করছে কিন্তু যাবেন কোথায়? সব জায়গাতেইতো মানুষের ভিড়। সেই ভিড় ঠেলে যে একটু বুক ভরে বিশুদ্ধ বাতাস নেবেন সেই উপায়ও থাকেনা। আপনার জন্য দরকার অপ্রচলিত কিছু ভ্রমণ গন্তব্য যেখানে সাধারণ মানুষ ভিড় বাড়াবে না। আপনি যেতে পারেন বান্দরবানে ঝরণা দেখতে। ঝরণা দেখার অভিযানে আপনাকে হাঁটতে হবে অনেক তাই কস্ট করে হেঁটে ঝরণা পর্যন্ত পৌঁছাবার মানসিকতা থাকতে হবে।
তুক-অ, লামোনাই বা দামতুয়া ঝরণা যে নামেই ডাকুন, বাংলাদেশের গুটিকয়েক জোড়া ঝরণা র মধ্যে এটি অন্যতম। ঝরণাটি যে ঝিরিতে তার নাম ব্যাঙ ঝিরি। বর্ষায় এই ঝরণা ফুলে ফেঁপে ধারণ করে দানবীয় রূপ। দেখে আসতে পারেন অনিন্দ্যসুন্দরী দামতুয়া ঝরণাকে।
যেভাবে যাবেনঃ
দামতুয়া ঝরনা বান্দরবানের আলিকদম উপজেলায় অবস্থিত। যেখান থেকেই আসুন আপনাকে নামতে হবে চকোরিয়াতে। এরপর চান্দের গাড়িতে করে পৌঁছে যাবেন আলিকদম। চাইলে মাতামুহুরী নামের লোকাল বাসেও আলিকদম পৌঁছাতে পারেন। চকোরিয়া থেকে আলিকদমের রাস্তা খুব চমৎকার এবং উপভোগ্য। পথে ইয়াংছা বাজারের শুরুতে আর্মি ক্যাম্পে জানাতে হবে যে আপনি ভেতরের দিকে ঝরণা দেখতে যাচ্ছেন। আলিকদম থেকে রিক্সায় বা পায়ে হেঁটে চলে যাবেন পান বাজার।
পান বাজার থেকে মোটর সাইকেল ভাড়া নিতে হবে আদুবাজার পর্যন্ত। ২ জন যাওয়া যায় এক বাইকে। এই ঝরণা ভ্রমণে তাই যতজনই যান না কেন তা জোড় সংখ্যক হলে ভালো হবে। মোটর সাইকেল থিংকুপাড়া আর্মি ক্যাম্পে পৌঁছলে আর্মি ক্যাম্পে আপনার আইডি কার্ডের একটি ফটোকপি জমা দিতে হবে। ফটোকপি সাথে না থাকলে আসলটাই জমা দিতে হবে যা ফেরার সময় ফেরত নিতে হবে।
দামতুয়ার সামনে প্রিয় নিজাম ভাই।
আদুপাড়ায় পৌঁছে স্থানীয় গাইড নিতে পারেন। গাইড ফি ৩০০-৫০০ টাকা। গাইড আপনাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে ঝরণার কাছে। পথ কেমন হবে তা পুরোটাই নির্ভর করছে কোন ঋতুতে যাচ্ছেন, বৃষ্টি হয়েছে কিনা তার উপর। আদু পাড় থেকে পামিয়া মেম্বার পাড়া – তামতই পাড়া – নামসাক পাড়া – কাখই পাড়া হয়ে ঝরণায় যেতে হবে। আদু পাড়া থেকে ঝরণায় আসা যাওয়া মিলিয়ে ৬ ঘন্টার মত লাগবে। এর আশে পাশেও কিছু ঝরণা আছে তাই দুই রাত থাকার সময় নিয়ে গেলেই ভাল ভাবে দেখে আসতে পারবেন। আলিকদমে থাকা খাওয়া ও গাইড খরচ রুমা বা থানচির মত বাণিজ্যিকরন এখনো হয়নি। এখনো এই অঞ্চলের অনেক মানুষেরা থাকার জন্য কোন টাকা নেয় না। গাইড বাবদও অনেক কম টাকা নেয় যা অনেক সময় দলের সদস্যদের ম্যানেজ করার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। তাই অহেতুক অতিরিক্ত টাকা পয়সা দিয়ে তাদের ব্যবহার আন্তরিকতার বদলে ব্যবসায়ীক মানসিকতার মনোভাবে রুপান্তরিত না হয় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত।
ভ্রমণকাল পরিকল্পনা:
দিন ১। রাতের বাসে ঢাকা থেকে আলিকদমের উদ্দেশ্যে যাত্রা ।
দিন ২- আলীকদম বাজার থেকে যেতে হবে ১৭ কিলো। সেখান থেকে আর্মির অনুমতি নিয়ে আদুপাড়া পৌঁছান। সেখান থেকে গাইড নিয়ে ট্রেকিং করে তুক-অ ঝর্ণা অভিযানে রওনা। ঝর্ণা থেকে ফিরে আবার আদুপাড়া হয়ে আলীকদম। আলীকদম থেকে রাতের বাসে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা।
আপনার হাতে সময় থাকলে ডিম পাহাড় ঘুরে নীলগিরি হয়ে বান্দরবান শহরে পৌছাতে পারেন। আবার আলিকদমের কাছেই লামাতেও কাটাতে পারেন কিছুটা সময়। চকোরিয়া থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব খুব বেশি নয় তাই সময় হাতে থাকলে সমুদ্রতটে কিছুটা সময় কাটিয়ে আসতে পারেন।
আলিকদমের দামতুয়া ঝরণা দেখতে যাবার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র (অরজিনাল কপি এবং ফটোকপি) সাথে রাখতে হবে। সাথে আরও রাখতে পারেন আপনার প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত ঔষধ এবং ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক বা মশার কামড় থেকে রক্ষা পাবার জন্য অডোমস ক্রিম। ঝরণায় যাবার পথ বেশ দুর্গম, সেই সাথে বৃষ্টি হলে আচমকা হড়কা বান হতে পারে তাই অতিরিক্ত দু:সাহসিকতা পরিত্যাগ করে সাবধানে থাকা উচিত।
Follow us on
Subscribe and stay up to date.

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
