ক্লাইম্বিং কথাটা শুনলেই যে ছবিটা মনের পর্দায় ভেসে ওঠে তার পুরোটা জুড়ে ছেলেদের দৌরাত্মটাই বেশি। কিন্তু যুগ আর সামাজিক এবং মানসিক পরিবর্তনের সাথে প্রতিদিন পরিবর্তিত হচ্ছে এই ছবি। ছেলেদের সাথে তাল মিলিয়ে ক্লাইম্বিংয়ের জগতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মেয়েদেরও উপস্থিতি। পৃথিবীব্যাপী মেয়েদের নিত্য নতুন অর্জন আর অংশগ্রহণে মুখর হয়ে উঠছে ক্লাইম্বিংয়ের এই দুরন্ত জগত। আর তার প্রকৃত প্রমাণ কিংবা উদাহরণ যাই বলিনা কেন তা হলো, ২০১৮ এবং ২০১৯ দু-বছরের এভারেস্ট ক্লাইম্বিংয়ের হার।
২০১৮ সালের আগে পর্যন্ত সর্বমোট ৪,৭৩৮ জন ক্লাইম্বার এভারেস্ট সামিট করেছেন যার মাঝে ৬০৫ জন নারী, যা মোট সামিটের ১২% শতাংশ। ২০১৮ সালে সারা পৃথিবীর মোট ৬১ জন নারী ক্লাইম্বার নেপালের দিক থেকে এভারেস্ট অভিযানে অংশগ্রহণ করেন এবং ৪৯ জন সফলভাবে পৃথিবীর শীর্ষ বিন্দু আরোহণে সক্ষম হন যা সে বছরের মোট সামিটারদের ১৮% শতাংশ।
একই ধারাবাহিকতায় নেপাল ডিপার্টমেন্ট অভ ট্যুরিজমের দেয়া তথ্যমতে এ বছরে (২০১৯) সারা পৃথিবী থেকে এভারেস্ট অভিযানের জন্য সর্বমোট ৩৭৫টি ক্লাইম্বিং পারমিট ইস্যু হয়েছে যার মাঝে শতকরা ২০% ভাগ অর্থ্যাৎ ৭৬টি পারমিটের অধিকারিনী দুঃসাহসী কজন নারী ক্লাইম্বার। যাদের মাঝে সংখ্যাগরিষ্টরা হচ্ছেন চীনের ২০ জন, ভারতের ১৮ জন নারী। ২০১৮ সালের এভারেস্ট অভিযানে নারী সামিটারদের সফলতার শতকরা হিসেব ছিলো ৮০ ভাগ, সেই একই পরিসংখ্যান যদি এবারের এভারেস্ট সিজনে ধরে নেয়া যায় তাহলে এবছর অন্তত ৬১ জন নারী ক্লাইম্বারের এভারেস্ট তথা পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখর সফল আরোহণের সম্ভাবনা রয়েছে, যা নিঃসন্দেহে অতীতের রেকর্ডগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে!
সফলতা আর ব্যর্থতার এই পরিসংখ্যানের ফাঁকে আসুন জেনে নেই এমন কজন অদম্য নারীর কথা যারা এই মুহুর্তে এভারেস্ট অভিযানের পথে রয়েছেন। আফগানিস্থানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় বাম পা হারানো আমেরিকান নাগরিক ক্রিস্টি অ্যানিস (Kirstie Ennis)। শারিরিক প্রতিবন্ধকতার কাছে হার না মানা মেয়েটি কৃত্রিম পায়ের সাহায্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখরের পথে। সেভেন সামিট প্রজেক্টের অংশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার সারয় ন’কুসি খুমালো (Saray N’kusi Khumalo) তিনবার ব্যর্থ হয়েও চতুর্থবারের মত আবারো আঁটঘাঁট বেঁধে নেমেছেন এভারেস্ট অভিযানে। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কুলগুলোর জন্য লাইব্রেরী নির্মাণ তাঁর এই সেভেন সামিট প্রজেক্টের মূল লক্ষ্য। স্বামীর অসফল এভারেস্ট অভিযানকে সফলতার পথে এগিয়ে নিতে অভিযানে রয়েছেন দুই নারী নীমা দোমা শেরপা (Nima Doma Sherpa) এবং ফার্দিকি শেরপা (Furdiki Sherpa)। উল্লেখ্য যে, ফার্দিকি শেরপার স্বামী ২০১৩ সালে এভারেস্ট অভিযানে রোপ ফিক্সিং করার সময় মারা যান এবং নীমা দোমা শেরপার স্বামী ২০১৪ সালের এভারেস্ট সিজনে বেইজ ক্যাম্পের কাছেই তুষার ধ্বস (Avalanche) –এ মারা যান। এই দুই নির্ভিক নারীর অভিযানের নিয়মিত আপডেট জানতে Two Widow Expedition –এর ফেসবুক পেইজে চোখ রাখতে পারেন। গত বছর চোয়্যু (Choy Oyu – 8,188 mtr) সামিটের কাছাকাছি কোথাও বয়ফ্রেন্ডকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া প্রফেশনাল স্কীয়ার ক্যারোলিন গ্লীচ (Caroline Gleich), যিনি লিঙ্গ সমতার স্লোগানকে সামনে রেখে এভারেস্টের চৃড়ার পথে এগিয়ে চলেছেন।
এমন দুর্গম স্বপ্নের পথে চলতে থাকা এই সব নির্ভিক, দুরন্ত এবং দুঃসাহসী নারীদের জন্য রইলো পর্বতপ্রতিম শুভেচ্ছা আর শুভকামনা।
Follow us on
Subscribe and stay up to date.

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
