মাহমুদ হাসান খান- বাংলাদেশের ভ্রমণ জগতের উজ্জ্বল একটি নক্ষত্রের নাম। তিনি নিজেই নিজের পরিচয়। নিজেই যেন একটি ব্র্যান্ড। “বেড়াই বাংলাদেশ” নামক ফেসবুক ভিত্তিক একটি ভ্রমণ দলের কর্ণধার ছিলেন মাহমুদ হাসান খান, যিনি ঘরকুনো বাঙ্গালীকে টেনে বের করে এনেছিলেন ঘরের বাইরে, দিয়েছিলেন ভ্রমণের স্বাদ, পৃথিবীতে বেঁচে থাকার স্বাদ। জীবনের সফলতার মাপকাঠি অর্জনের ইঁদুর দৌড় বরাবরই অপছন্দ করতেন তিনি আর তাই নিশ্চিত চাকুরী, নিশ্চিত জীবনের লোভ ত্যাগ করে শুরু ভ্রমণ করেই বাঁচার জন্য চাকুরীও ত্যাগ করেছিলেন।

ভীষণ ভোজন রসিক ছিলেন তিনি। যেখানেই যেতেন খুঁজে বের করতেন সেখানকার বিখ্যাত, বিশেষ খাবারগুলো। মাটির চুলার রান্না করা সাধারণ খাবারে ছিল তার অসীম তৃপ্তি। তিন বছর আগে এই দিনে আত্মীয়-পরিজন, ভ্রমণবন্ধু আর সহকর্মীদের সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে অকালে এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেন তিনি।

বাংলাদেশে এখন ভ্রমণ দলের ছড়াছড়ি কিন্তু তাঁর অকাল প্রয়াণে বাংলাদেশের ভ্রমণ জগতের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা হয়ত কিছু দিয়েই পূরণ করা সম্ভব নয়। ”আগে দেখুন নিজের দেশ” এই স্লোগানকে সামনে রেখে প্রতিনিয়ত তিনি চেষ্টা করে গেছেন বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের প্রচার এবং প্রসারের। সেই পথ ধরে আমরা কয় জনই বা এগোতে পেরেছি।

দেশের ভ্রমণ গন্তব্য এবং পর্যটন শিল্পকে পুরো পৃথিবীর মানুষের কাছে পরিচয় করে দেয়ার লক্ষ্যে তিনি তৈরি করেছিলেন ”ট্রিপ টু বাংলাদেশ” নামক একটি বিশেষ সংস্থার যার সুবাদে প্রচুর বিদেশী ট্যুরিস্ট ঘুরে বেড়িয়েছেন আমাদের এই দেশে। ভ্রমণের বিভিন্ন তথ্যের জন্য বিখ্যাত “লোনলি প্ল্যানেট” তাঁকে আখ্যায়িত করেন বাংলাদেশের গার্ডিয়ান এঞ্জেল হিসাবে।

 তিনি বিশ্বাস করতেন সকল দেশের রাণী আমাদের এই জন্মভুমি আর তাইত তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন নিজের দেশকে সবার মাঝে তুলে ধরতে। নিত্য নতুন ভ্রমণ গন্তব্য খুঁজে বের করে সেটাকে জনপ্রিয় করে তুলতে তিনি ছিলেন অতুলনীয়। বরিশালের পেয়ারা বাজারে এখন প্রতিবছর প্রচুর পর্যটক যান তাঁর দেখানো রাস্তা ধরেই। মৃত্যুর বেশ কিছুদিন আগে চাকরীর মতো নিশ্চিত জীবন ছেড়ে দিয়ে তিনি বেছে নিয়েছিলেন এক অন্য রকম স্বাধীন জীবন, যেটাকে তিনি ভ্যাগাবন্ডের জীবন হিসেবে আখ্যায়িত করতে পছন্দ করতেন বেশী। তিনি চাইতেন জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করতে আর তা তিনি করেছেনও। নরম মনের মাহমুদ হাসান খান ছিলেন দুঃস্থদের সেবায় নিবেদিত প্রাণ। বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ বিতরণ থেকে শুরু করে, এতিমদের জন্য ইফতারি আর ঈদের নতুন জামা দেয়া সব কিছুতেই তিনি ছিলেন উদ্যোগী। সদা হাস্যময়, সদালাপী মানুষটি যখন যেখানে গিয়েছেন জয় করে নিয়েছেন সকল মানুষের মন।

বাংলাদেশের ট্যুরিজমে যার অবদান ছিল অপরিসীম, দেশীয় পর্যটনের অপার সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখা মানুষটার এই অকালে চলে যাওয়ার শোক মেনে নেয়ার শক্তি আমাদের নেই। আপনার দেখানো স্বপ্নের পথ ধরেই এগিয়ে যাক বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প। ভালো থাকুন ওপারে।

Follow us on

Subscribe and stay up to date.

BUY YOUR
HAMMOCK
NOW

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

পর্যটকের মৃত্যুপর্যটকের মৃত্যু!
বরগুনাবরগুনা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি

About the Author: Aoezora Zinnia

সহকারী অধ্যাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিকস এন্ড ফিস ব্রীডিং বিভাগে কর্মরত আওজোরা জিনিয়া ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন। একসময় প্রবাসী জীবন-যাপনে অভ্যস্ত জিনিয়া ঘুরে বেড়িয়েছেন অসংখ্য দেশ। পর্বতারোহণ নিয়েও রয়েছে তার দারুণ দারুণ সব স্বপ্ন। আর সেই পথ ধরেই তিনি ছিলেন মাউন্ট বাটুর, মাউন্ট ফুজি, মাউন্ট কানামো সহ বিভিন্ন পর্বতারোহণ অভিযানে। বনের সবুজ প্রকৃতি, পাহাড়, ঝিরি, ঝর্ণার প্রতি তীব্র ভালোবাসার টানে সুযোগ পেলেই ছুটে বেড়ান থেকে পাহাড়, প্রান্তর থেকে প্রান্তর, বুনোপথ থেকে বুনোপথে।

Sharing does not make you less important!

পর্যটকের মৃত্যুপর্যটকের মৃত্যু!
বরগুনাবরগুনা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি

Sharing does not make you less important!

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

পর্যটকের মৃত্যুপর্যটকের মৃত্যু!
বরগুনাবরগুনা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি

Sharing does not make you less important!

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

|Discussion

Leave A Comment

Related Posts and Articles

If you enjoyed reading this, then please explore our other post and articles below!

Related Posts and Articles

If you enjoyed reading this, then please explore our other post and articles below!

Related Posts and Articles

If you enjoyed reading this, then please explore our other post and articles below!