বাংলাদেশের তথাকথিত সর্ব্বোচ্চ চূড়া কেওক্রাডং (আদতে পঞ্চম) যে ব্যক্তি মালিকানাধীন সেটা জানেন? হ্যাঁ, নামে কেওক্রাডং হলেও এটি আসলে এক অলিখিত লালা ল্যান্ড যা লালা বমের নিজস্ব সম্পত্তি আর তাই এখানে প্রতিনিয়ত চলছে লালার একচ্ছত্র আধিপত্য এবং মনোপলি ব্যবসা। এই পাহাড়ের চূড়ায় ঘাটি গেঁড়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এছাড়া আর একটিমাত্র বসতি এখানে আছে সেটা হল লালার ঘর।
কেওক্রাডং এক ভীষণ জনপ্রিয় গন্তব্য আমাদের দেশে। অনেকেরই পাহাড় যাওয়ার অভিজ্ঞতা শুরু হয় কেওক্রাডং দিয়ে। পাহাড়ের প্রতি নেশা, ভালোবাসা সবই জন্মায় ওই বগালেক থেকে হাঁটতে হাঁটতে কেওক্রাডং ওঠার পথে।
নানান নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে বান্দরবানে যাবার গন্তব্য এখন হাতে গোনা দুই তিনটি। সেটারই দারুণ সদ্বব্যবহার চলছে কেওক্রাডংয়ে। ট্যুরিস্টদের রাত্রি যাপনের জন্য কিছু ঘর বানানো হয়েছে। সেখানে গণরুমের মত ঢালাও তোষক পাতা রয়েছে, সাথে দেওয়া রয়েছে লেপ আর বালিশ। ব্যাস এইটুকুই। ভাড়া জন প্রতি ৩০০ টাকা।
কাগজে কলমে আমরা এখন গরীব থেকে উন্নয়নশীল দেশের খেতাব পেয়েছি। অনেক উন্নত শহরের জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যের নানান ইয়ুথ হোস্টেলে আমি থেকেছি। শেয়ারড ঘরগুলোতে প্রত্যেকের জন্য আলাদা খাট, লকার বা ট্রাঙ্ক আছে। পুরো ঘর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এছাড়া কমন স্পেসে রয়েছে আরো নানান রকম সুযোগ সুবিধা। কোন কোন জায়গায় ৩০০টাকার হোটেলে আমি ফ্রি ব্রেকফাস্টও পেয়েছি। আর লালা ল্যান্ড এর ডাইনিংয়ে অনেক দাম দিয়ে গিলতে হয় খাবারের নামে অখাদ্য। পরিমাণেও দেওয়া হয় কম। অতিরিক্ত চাইলে শুনতে হতে পারে যে আর নেই।
আমরা যখন কেওক্রাডংয়ে পৌঁছলাম তখন ভীষণ ক্ষুধা পেটে! কেওক্রাডংয়ে যাবার আগে গিয়েছিলাম বরবক ঝর্ণায় তাই খাওয়ার সুযোগই মেলেনি বিকেল পর্যন্ত। এমন সময় সামনে দেওয়া হল ভাত, আলু ভর্তা আর মুরগীর তরকারি। আমার বাটিতে ছিল দুইটা গিলা, একটা গলার টুকরো আর একটা অর্ধেক পাখনা যেখানে কোন মাংস নেই, শুধু হাড়টুকু। পরে শুনেছি এই খাবারের দাম ২৩০ টাকা।
ক্ষুধার্ত অবস্থায় সেই খাবার গিললেও রাতের মেনু দেখে আমি আর রাতে খেলাম না। অন্যরা দেখছি বার বার মরিচের ভর্তা চাইছে, সেটা মাখিয়ে যদি একটু ভাত গেলা সম্ভব হয়। পরদিন সকালে নাস্তায় খিচুড়ীতে মরিচ ভর্তা মাখিয়ে মুখে দিতেই কেউ কেউ চিৎকার করে উঠল ঝালে। বুঝলাম আগের দিন রাতে বারবার মরিচের ভর্তা চাওয়ায় এখন এমন ঝাল করে দিয়েছে যাতে কেউ খেতে না পারে। লালা ল্যান্ড এর অতিথিশালায় কোন আতিথেয়তা নেই। “আপনি গেছেন কেন? এখন কিছু টাকা রেখে যান “ আমার কাছে এমনই লাগল ব্যাপারটা।
বর্ষাকালে কাঁচা রাস্তাঘাটের অবস্থার কারণে কমলাবাজারের পর থেকে হেঁটে যেতে হয় কেওক্রাডং।বছরের অন্যসময় চূঁড়া পর্যন্ত চান্দের গাড়ী চলে। হ্যাঁ ঘর বা খাবার তৈরীর সব কিছুই অনেক দূর থেকে বয়ে আনাতে হয় তাই খরচ কিছুটা বেড়ে যেতেই পারে কিন্তু যে পরিমাণ দাম রাখা হয় চাইলে সে দাম রেখে সেবার মান বাড়ানো অসম্ভব নয়, কিন্তু কেন চাইবে??? কারণ চলছেতো ঠিকই। কেউতো প্রতিবাদ করছে না উল্টো ট্যুরিস্টের কোন অভাব নেই সেখানে। ঢাকায় থাকা ছেলের জন্য প্রাডো কিনবে নাকি অডি সেটা নিয়েই চিন্তিত লালা বম। ট্যুরিস্টদের নিয়ে ভাবার অবকাশ কই?
কেওক্রাডং চূড়া থেকে খানিক এগিয়ে গেলেই বাংলাদেশের সর্ব্বোচ্চ এবং সবচেয়ে সুন্দর পাহাড়ী পাড়া পাসিং পাড়ার অবস্থান। ২০১৫ তেও যখন ট্যুরিস্টদের প্রথম পছন্দ ছিল পাসিং পাড়ায় থাকার তখনো এমন মনোপলি ব্যবসা ছিলনা। ২০১৫ তে নিষেধাজ্ঞার পরে সব ট্যুরিস্ট এখন বাধ্য হয় রাতটা কেওক্রাডং কাটাতে আর তারই পূর্ণ সুযোগ নিয়ে চলছে যথেচ্ছাচার ব্যবসা।
বান্দরবানের অনেক জায়গায় আমি হেঁটেছি। থেকেছি পাহাড়ীদের ঘরেই। খেয়েছি তাদের সাথেই। বেশীর ভাগ জায়গাতেই থাকার জন্য ১০০ টাকা করে নিয়েছে। আর খাবারের জন্য আলাদা করে টাকা কখনো নিয়েছে কখনো কখনো নেয়ওনি। বেশ কজনকে পেয়েছি খাবারের টাকার কথা বলাতে ভীষণ অপমানিতবোধও করেছেন!! তবে হ্যাঁ তার মানে এই নয় যে পাহাড়ের মানুষগুলো ব্যবসা করবেনা। আমরা কিংবা আমি নিজেও চাই তারা ট্যুরিজম ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকুক! তবে সেটা যেন কোনভাবেই জুলুম, স্বেচ্ছাচারিতা কিংবা অসহনীয় পর্যায়ে চলে না যায়!
অত্যাধিক লোভ, শোষণ কিংবা স্বেচ্ছাচারিতা কখনোই সুন্দর কিছু বয়ে আনেনা..!!
Follow us on
Subscribe and stay up to date.

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

Its really sad.. I have lost my interest when Army stop staying at Pasing Para..
It’s Same here… :(
মানতে পারলাম না আপনার এই আর্টিকাল টির কথা গুলো! প্রথমত লালার ছেলে লালার সাথেই ঐ ঘরে থাকে, ঢাকায় না। লালা খুবই ভাল একজন মানুষ, এবং তার পরিবারও। আপনার বা আপনাদের সাথে কেমন ব্যবহার করেছে জানি না, আমার এবং আমাদের সাথে খারাপ কিছুই ঘটে নি। (গিয়েছিলাম ১৬-০৩-২০১৯) তবে একদল তরুন রুম নিয়ে লালার সাথে খারাপ ব্যবহার করার কারনে তাদেরকে দার্জিলিংপাড়ায় থাকতে হয়। পর্যটক বেশি থাকার কারনে খাবার সংকটে পরলেও, বলা মাত্রই আবার রান্না করে পরিবেশন করেছেন তারা। আর একটা কথা, লালা, যে কিনা বাংলাদেশের এমন একজন, যার নামে পাহাড় আছে। তারা যে আমাদের থাকার জন্য (টাকার বিনিময়ে) নিজের বাসার রুম দিয়ে দিচ্ছে, এটাই বেশি। চাইলেই সে সবার আশা যাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে। পারে আরও অনেক কিছুই করতে। কিন্তু না, কারন সে হচ্ছেন লালা।
জনাব রাহাত বাপ্পি, আপনি কতবার কেওক্রাডং গেছেন জানিনা কিংবা আপনি কেওক্রাডং ছাড়া বান্দরবান বা বাংলাদেশ কিংবা দেশের বাইরের পাহাড়ে আর কোথায় কোথায় গিয়েছেন তাও জানিনা। তবে আপনার কথার নমুনা দেখে আপনাকে নিতান্তই নব্য ট্রাভেলার বলেই মনে হচ্ছে। যাই হোক, এবার আপনার প্রসঙ্গে আসি। প্রথমত আপনি লালার ছেলেকে বাড়িতে দেখেছেন মানে এই নয় যে সে বাড়িতেই থাকে। লালা একজন ভাল মানুষ বললেন আপনি জানেন কি লালা একসময় শান্তি বাহিনীতে ছিল! শান্তি বাহিনী মানে কি জিনিস তা বুঝেন আপনি? আপনার সাথে খারাপ কিছু ঘটেনি কারণ আপনার কাছে তারা যা বলছে তা অন্ধের হাতি দেখার মত। আপনি ২০১৯ সালের কথা বললেন, কিন্ত আমরা যারা ২০০০ সাল বা তার আগে থেকে পাহাড়ে যাওয়া আসা করি কিংবা আমরা যারা দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের বিভিন্ন ট্রেইলে ট্রেকিং বা বিভিন্ন অভিযানে গিয়েছি তারা খুব ভালভাবেই জানি পাহাড়ে থাকা খাওয়ার খরচ কেমন আর তাই, তা যখন বেশি হয় কিংবা টাকার অনুপাতে পর্যাপ্ত সুবিধা না পাওয়া না যায় তখন আমাদের তা গায়ে লাগে। আপনি বললেন লালা এমন একজন যার নামে পাহাড় আছে। আপনি কি এটা জানেন বান্দরবানের অধিকাংশ পাহাড়ই মারমা রাজা কতৃক কারো না কারো নামে আছে!! এমনকি অনেক সমতলের মানুষের নামেও বাংলাদেশে অসংখ্য পাহাড় রয়েছে সে ব্যাপারে আপনার ধারণা আছে কি!!! আপনি বললেন সে চাইলেই সবার যাওয়া আসা বন্ধ করে দিতে পারে। আরে ভাইজান, মাত্র ৬০০/৭০০ একরের কেওক্রাডং বন্ধ করে দিলে কি আর কোন যাওয়ার জায়গা নেই..!?! কেওক্রাডং-এর সোল্ডার ধরে সরকারী রাস্তা, আপনার কি মনে হয় সে এতটাই ক্ষমতাশীল যে চাইলেই সরকারী রাস্তা ধরে যাওয়া আসা বন্ধ করে দিতে পারবে!!?? আপনি এও বললেন সে চাইলে আরো অনেক কিছুই করতে পারে..!! ভাইজান, এসব কথা তথাকথিত নব্য ট্রাভেলারদের জন্য রেখে দিন। এসমস্ত জুজুর ভয়ে যদি কাবু হয়ে থাকতাম তাহলে আমি বা আমরাও কোন ধরনের খারাপ কিছু না ঘটিয়ে বা কিছু না বলে আপনার মত সব দেখেশুনে ঘাড় গুজে সহ্য করে বাড়ি ফিরে আসতাম আর ফিরে এসে এমন কোন জায়গায় আপনার মত কমেন্ট করে ভিলেন-কে হিরো বানানোর চেষ্টারত থাকতাম।
পরিশেষে আপনার প্রতি একটা অনুরোধ আরো আরো ঘুরে বেড়ান। আরো জানুন। তারপর এমন মন্তব্যের যোগ্যতা আপনার তৈরি হবে। কুয়োর ব্যাঙের মত একবার দেখেই সব জেনে যাওয়ার ভান না করে পৃথিবীটা ঘুরে দেখুন। পৃথিবীটা অনেক বড়, ব্যাঙের কুয়োর মত লালা বমের কেওক্রাডং নয়..!!!!
দুই দিনের বৈরাগী, ভাতেরে বলে অন্ন।