শেরকর পাড়া, থানচি হয়ে তাজিংডং যারা সামিট করেছেন তাদের কাছে পরিচিত একটি নাম। এই পাড়ার ব্যাপারে বিস্তারিত আমি তেমন কিছুই জানিনা, তারপরেও এই পাড়াটাকে নিজের পাড়ার মতই মনে হয়। শেরকর পাড়ায় প্রথমবার যাওয়া হয় অপূ ভাইয়ের সাথে। সেবার যেই দাদুর বাড়িতে ছিলাম সেই দাদু এবং তার পরিবারের আন্তরিকতার জন্যই আসলে এই পাড়াটাকে ভালবেসে ফেলা। এই দাদুর বাড়ি এই নিয়ে দুবার যাওয়া হল, দাদুর সাথে কত কথা হল, কিন্তু দাদুর নামটা জানা হল না। নামের প্রেমে নয় আমি আসলে দাদুর প্রেমেই পড়েছি।
দাদুর বুড়ি আর দাদু সত্যিই চমৎকার। চমৎকার মানুষগুলোর বাসায় রাতে থাকব বলেই থানচি থেকে দুপুর সাড়ে তিনটায় রওনা দিয়ে রাত ১১ টায় শেরকর পাড়ায় পৌঁছাই। এমন ভূতুড়ে পরিকল্পনায় সবার অংশগ্রহণ এবং সফলভাবে তার বাস্তবায়নের জন্য সবার জন্য ভূতুড়ে ভালোবাসা থাকবে। থানচি থেকে আলাদা দল হয়ে আমরা শেরকর-তাজিংডংয়ের ট্রেইলে ঢুকে পড়ি। প্রথমে গাড়ি চলার রাস্তা ধরে আমাদের পাহাড়ে উঠে পড়া শুরু। এরপরে বনবাদাড়, ঝিরি, পাহাড় ডিঙ্গিয়ে এগোতে থাকলাম শেরকরপাড়ার দিকে।
আমরা হাঁটতেই থাকি। এদিকে বিকেল নেমে আসে, সূর্য ডুবে যায়, সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যাও চলে গিয়ে রাতের চাদর পরে নেয় পাহাড়। আমরা হাঁটতেই থাকি। ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুনি। গাছের ফাঁক দিয়ে চাঁদের আলো গায়ে মেখে হাঁটতেই থাকি। পাহাড়ে উঠি, নামি, হাঁপিয়ে যাই, বসে পড়ি, পানি খাই আবার হাঁটতেই থাকি। অসংখ্য তারা আমাদের সঙ্গেও হাঁটে। চাঁদের আলোয় পথ দেখে আমরা হাঁটতে থাকি রুপালি আলো মাখানো রাতের পাহাড়ের শরীর ধরে। কখনো তার ঘাড়ে, কখনো পিঠে, কখনো শরীরের ভাঁজে। আমাদের এই হাঁটা চলতেই থাকে শেরকর পাড়া পর্যন্ত।
দুটি পাহাড় ডিঙানোর ক্লান্তি শরীরে মেখে বোর্ডিংপাড়ার কিছু আগে মোটামুটি আরামের একটা রাস্তা আর ঝিরিঝিরি বাতাস আমাদের ক্লান্তি মুছে দিলো। তখনই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা শেরকর পাড়া চলে যাব।
এতক্ষণে সন্ধ্যা ৭টা বেজে গেছে। বোর্ডিংপাড়ার ঝিরিতে কিছুটা সময় শরীর জুড়িয়ে নিয়ে আমরা আবার হাঁটায় মগ্ন। এবার শুরুতেই খাড়া ওঠা। এই ওঠা যেন আর শেষ হয় না। একটা সময় মনে হচ্ছে ফিরে যাই বোর্ডিংপাড়ায়। মনে মনে বারবার আফসোস হচ্ছিল কেন আগালাম। শরীরের পেশিগুলো যেন তখন মনকে বলছে যে রেহাই দাও। মনের এই আকুতিকে মস্তিষ্ক তেমন একটা আস্কারা দেয় না।
এভাবে এক পা এক পা করে আমরা সবাই একটা উঁচু খোলা জায়গায় এসে শুয়ে পড়লাম। মন বলছে ব্যাকপ্যাক খোলো, টেন্ট বিছাও, ঘুমাও; শেরকরপাড়া কাল যাওয়া যাবে কিন্তু অন্য কারণে আবারও মন মস্তিষ্কের কাছে আস্কারা না পাওয়ায় শরীরের পেশিগুলো আবার প্রস্তুতি নিয়ে নিল। এবার খাড়া নামব আমরা, গাছ কেটে বানানো সিঁড়ি দিয়ে।
চাঁদ কিন্তু আমাদের সঙ্গেই রয়েছে, সঙ্গে তারারাও। ক্লান্তিতে মাখামাখি হয়ে যখন এই ক্লান্ত দেহের ভার নির্যাতিত পা দুটো আর বহন করতে পারছিল না, তখন আমরা একটা হালকা উঁচু জায়গা পেরিয়ে ঢালু নেমে একটা বাঁকে এসে দাঁড়ালাম আর চোখে এসে পড়ল শেরকর পাড়ার আলো।
থানচি দিয়ে শেরকর পাড়া হয়ে তাজিন ডং যেতে চাইলে জিপিএস ট্রেইল অনুসরণ করে চলে যেতে পারবেন।
Follow us on
Subscribe and stay up to date.
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
Get Social