পাতাল কালী, এ যেন এক অন্য জগত। অনেকদিন পাতাল কালী ধরে এই ঝিরিটা ট্রেক করার ইচ্ছে থাকা স্বত্বেও রওনা হয়ে যাওয়াটা কোন ভাবেই হয়ে উঠছিলো না। যাচ্ছি, যাবো করে করে বারবার পরিকল্পনার ঝাপি খুলে বসাটাই সার। এরই মাঝে একদিন হাতে তেমন কোন কাজ-কর্ম নেই। কি করা যায়, কি করা যায় ভাবতে ভাবতেই টুকটাক কিছু ঘুরোঘুরির ভাবনা মাথায় নিয়ে বেড়িয়েছি। কিন্তু সীতাকুন্ড পৌছে হারুন ভাইয়ের ব্যস্ততার নমুনা দেখে যখন সমস্ত পরিকল্পনার গুড়ে বালি ঠিক তখনই মাথায় এলো আজই হয়ে যাক না..!! সাথে সাথেই সমস্ত চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে রওনা হয়ে গেলাম হিন্দু ধর্মের রহস্যময় গভীরতায় নিমজ্জিত, আদি ভৌতিক সেই ঝিরি পথ পাতাল কালী, এ যেন এক অন্য জগত !!
যদিও অনেক মতবেদ প্রচলিত আছে এই ঝিরি-কে কেন্দ্র করে এবং তার কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা এটা প্রমাণ করাও একটা বিশাল তর্কের বিষয়। তবে অনুমান করা হয়, কয়েকশো বছর আগে শিব এবং কালির কিছু অনুসারি বা সাধক গুপ্ত কোন ধ্যান বা সাধনার জন্য এই ঝিরি-কে বেছে নেয়। এবং তার অনেক নিদর্শন এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এই ঝিরির বিভিন্ন জায়গায়।
কয়েকবার আমরা ঐ পীঠস্থান পর্যন্ত গেলেও কোনবার-ই ঝিরিটা ট্রেক করা সম্ভব হয়নি। তার কারণও অবশ্য ছিল। স্থানীয় কাঠুরিয়া বা জুম চাষী-দের কেউই ঐ ঝিরি সম্পর্কে তেমন ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেনা আর তার কারণটাও খুবই সাধারণ। জন্তু জানোয়ারের আক্রমণ, ভূত প্রেতের উপর প্রবল অন্ধ বিশ্বাস আর ডাকাতদের অভয়ারণ্য হিসেবে এই জায়গার দুর্নাম তেমন কিছু কম নয় আর সেই সাথে উপরি পাওনা হিসেবে টীম মেম্বারদের অনিচ্ছা তো রয়েছেই। যদিও ওদেরকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। কারন পিতৃ প্রদত্ত প্রাণটাকে কে না ভালবাসে। কিন্তু এইসব নিয়ে চিন্তা ভাবনার জন্য অনেকেই আছে, আমরা কজন না হয় নাই বা ভাবলাম। তাছাড়া ঝিরি ধরে এগোনোর পরিকল্পনা নিয়ে যেহেতু বেড়িয়েছি নতুন ঝর্ণা পাওয়ার লোভটা তো আর ছেড়ে দেয়া যাচ্ছেনা। আর তাই কোন কিছুর বিনিময়ে এই লোভ থেকে পরিত্রাণের কোন দরজা আমাদের কাছে খোলা নেই।
যদিও আমরা যা আশা করেছিলাম সেই ধরনের কোন ঝর্ণা আমাদের কপালে জোটেনি তার উপর যা কিছু পেয়েছি তাও যত্ন করে ফ্রেমে বন্দি করে রাখা সম্ভব হয়নি ট্রেইলের অন্ধকার পরিবেশ, দুর্গমতা আর কিছুক্ষণ পরপর আকস্মিক বৃষ্টির অত্যাচারে। তারপরও আমরা খুব খুশী এই ভেবে যে, অন্তত হেঁটে তো আসতে পেরেছি শতাব্দি প্রাচীন সেই আধো অন্ধকার রহস্যময় পথ ধরে। সারাটা পথ হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছি সেই মানুষগুলোকে যারা সমস্ত ভয় ভীতিকে উপেক্ষা করে দিনের পর দিন এখানে ধ্যান-সাধনায় ব্যস্ত ছিলেন। যে মানুষগুলো কোন ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি ছাড়াই শ্রেফ মনের জোরে পুরোনো যন্ত্রপাতির সাহায্যে পাথর কেটে তৈরি করেছিলেন এসব অনন্য শিল্পকর্ম।
এই অভিযানে যার কথা না বললে পুরো গল্পটা ম্লান হয়ে যায় সে হল, এসহাক নামের একজন সাধারণ জুম চাষী । ঝিরিটা শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রচন্ড ক্লান্ত আমরা যখন এই গভীর জঙ্গল থেকে বেরুনোর পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি তখন অনেকটা অবতারের মতই এই লোকের আবির্ভাব। তার সাথে দেখা না হলে হয়ত এত সহজে সেদিন বেরুনোর পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হত না। পথ ঠিক করে দেয়া, বাগানের পেয়ারা দিয়ে ক্ষুধার্ত আমাদেরকে অাপ্যায়ন, এই পথে কেন এলাম তাই নিয়ে কপট শাসন সবকিছু মিলিয়ে অনেক কৃতজ্ঞতা এই সাধারণ কিন্ত বিশাল মনের মানুষটার জন্য।
Follow us on
Subscribe and stay up to date.
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
Route ta bolun plzzz