এখানে চলে নিত্য মেঘের আনাগোনা । ইচ্ছেস্বাধীন মেঘেদের লুটোপুটির কারণে এখানকার রিসোর্টটির যথার্থ নাম রাখা হয়েছে দ্য ক্লাউড ইকো রিসোর্ট । বান্দরবান জেলার থানছি এবং রুমার মাঝামাঝি গ্যালেংগা নামক স্থানে তেমাতং পাহাড়ে অবস্থিত এই রিসোর্টটি সাঙ্গু নদীর পাড় ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে। তাই ইঞ্জিন লাগানো ছোট ডিঙিতে করে নদী পথেই যাতায়াত করতে হয়। নদীর দু’পাশের মনোরম দৃশ্যাবলী উপভোগ করতে করতে কখন যে গ্যালেংগা বাজার সংলগ্ন ঘাটে পৌঁছে যাবেন টেরই পাবেন না। বাজারের পাশেই ব্রিজ পার হয়ে গেলেই দেখতে পাবেন রিসোর্টে মেঘেদের মেলা।

নিজস্ব একটি লেক ক্লাউড ইকো রিসোর্ট -কে করে তুলেছে অনন্য। দূরে দেখা যায় পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য নীলগিরি। রিসোর্টের সামনে নদীর পাড় থেকে শুরু হয়েছে সুউচ্চ পাহাড়ের সারি। রিসোর্টের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন না হলেও অতিথিদের থাকার জন্য রয়েছে কাঠ-বাঁশ আর ছনের ঘর যেখানে রাত কাটানো হতে পারে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। ঘরের পাশে টিলার উপরে কিছুটা হেঁটে গেলে পাওয়া যাবে ‘আড্ডা মাচাং’, যেখানে বসে আপনি অনন্ত সময় কাটাতে চাইবেন আড্ডা দিয়ে। রাতে তারা দেখার জন্যও এটি আদর্শ জায়গা। এই মাচাংয়ে বাতাসের নিরবচ্ছিন্ন আনাগোনা নিমেষে ভুলিয়ে দেবে আপনার সকল অবসাদ আর ক্লান্তি।

দূরে দেখা যাচ্ছে রিসোর্টের ঘরগুলো। ছবি: সারোয়ার জাহান

আড্ডা মাচাং। ছবি: সারোয়ার জাহান

আড্ডা মাচাংয়ে একটি মুহূর্ত। ছবি: হানিফ খোকন

ক্লাউড ইকো রিসোর্ট -এ আপনি রসনা বিলাসের জন্য পাবেন সাংগু নদীর তাজা মাছ, তাজা মৌসুমী ফল, জুমের চাল, শাক-সবজি যেগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে তেমতং পাহাড়েই ফলানো হয় এবং সংগ্রহ করা হয়। রিসোর্টের বাবুর্চি কাম কেয়ারটেকার সবুরের রান্না এবং আতিথেয়তাও অসাধারণ। রিসোর্টের নিজস্ব ৫০০ আমগাছ আছে। আমের মৌসুমে খাওয়া যাবে ফরমালিন ছাড়া সুস্বাদু আম। আরেক পাশে আছে রাবার গাছের বাগান যেখানে রয়েছে এক হাজার রাবার গাছ। আরও রয়েছে পাঁচ হাজার কলা গাছ।  

কথা হয় ক্লাউড ইকো রিসোর্ট -এর স্বত্তাধিকারী হানিফ খোকনের সাথে। তিনি জানান, ‘পাহাড় আমার ভালো লাগে, পাহাড় আমাকে টানে চুম্বকের মতো। বেসিক্যালি আমি লিখালিখি করি। একসময় ভেবেছিলাম নির্জন পাহাড়ে নিজের একটা কুটির হবে, সেখানে মনের মতো করে লিখব। সেই মতো পাহাড়ে জায়গা খুঁজতে থাকি এবং অনেক দিন খোঁজার পর পেয়েও যাই কিন্তু ততদিনে আমার ভাবনা আরও বড় হয়। ভাবলাম নিজেই একটা রিসোর্ট করি না কেন! ব্যাস হয়ে গেল।

তবে আমি টিপিক্যাল রিসোর্ট করছি না, এটা পুরোটাই ইকো রিসোর্ট হবে। আপনি যা খাবেন সব আমার নিজের উৎপাদিত।এমনকি মাছও আমার নিজের লেকের। ফল থেকে শুরু করে শাক-সবজি সবকিছুই নিজেদের চাষের আর সবচে বড় কথা, আমি এটাকে একটা কালচারাল ভিলেজ বানাতে চাচ্ছি। সেই লক্ষ্যে কাজও করে যাচ্ছি।’

হানিফ খোকন আরও বলেন, ‘দেখেন, আমি নিজে রিসোর্ট করার আগে যখন ঘুরতে যেতাম ছাত্রজীবনে, আমি নিজেই বুঝেছি যে, বাজেট একটা ব্যাপার। সেই জায়গা থেকে ছাত্র বা যারা কম বাজেটে ঘুরতে চায়, তাদের জন্য আমার আলাদা কিন্তু ভালো ব্যবস্থা থাকবে। একজন কবি, একজন গল্পকার, একজন ডাক্তার, একজন ভালো সিনেমা মেকার, একজন ভালো চিত্রশিল্পী এমন করে অনেক মানুষকে আমি এক টুকরো করে জমি দেব। আমার ২৫ একর জমি আছে সেখানে। জমি আমার কিন্তু সবাই নিজ খরচে একটা করে ঘর বানাবে। আমি চাই, একটা ব্যতিক্রম পর্যটন কেন্দ্র।

জুমে চলছে ধান চাষ। ছবি: হানিফ খোকন

উল্লেখ্য যে, ক্লাউড ইকো রিসোর্ট -এ দেশের সর্বপ্রথম বাঞ্জি লাফের আয়োজন করা হচ্ছে। সেই সাথে থাকবে সাঙ্গুতে র‍্যাফটিংয়ের সুযোগ। রিসোর্টের রয়েছে নিজস্ব নৌকা, যা দিয়ে আপনি ইচ্ছেমত ঘুরে বেড়াতে পারবেন সাঙ্গুর বুকে। রিসোর্টের উত্তরে গ্যালেংগা বাজারে আপনি পাবেন আদিবাসীদের উৎপাদিত দ্রব্যসামগ্রী। রিসোর্টের পার্শ্ববর্তী পাহাড়েই রয়েছে বিজিবি ক্যাম্প, যা আপনাকে দেবে বাড়তি নিরাপত্তা।

সাঙ্গুতে অবগাহন। ছবি: সৈয়দ জাহিদ হাসান

নিজস্ব নৌকায় ঘুরতে পারবেন সাঙ্গুর বুক চিরে। ছবি: হানিফ খোকন

রিসোর্টে চলছে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প। ছবি: হানিফ খোকন

সাঙ্গুতে র‍্যাফটিং। ছবি: হানিফ খোকন

উপভোগ করতে পারেন পূর্ণিমার রাত। ছবি: সারোয়ার জাহান

বান্দরবানের বেশ গহিনে অবস্থিত হলেও এখানে গ্রামীণ, রবি আর টেলিটকের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। যদিও এখানে বিদ্যুৎ নেই কিন্তু প্রয়োজনীয় কাজ চালানর জন্য জেনেরেটরের ব্যবস্থা আছে। রিসোর্টের পাশে আছে কিছু গ্রাম, যেখানে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস। তাদের পাড়ায় ভ্রমণ করে দেখতে পাবেন তাদের জীবনযাত্রা, আচার-অনুষ্ঠান। তা ছাড়া বর্ষার সময় প্রচুর ঝরনা দেখা যায়। রিসোর্টে আসা এবং যাওয়ার পথের মনোরম দৃশ্য ভোলার মতো নয়। ফেরার পথে রুমা হয়ে ফিরলে নদীর পাশে পাবেন ‘রিজুক ঝরনা’। নৌকা থামিয়ে এই সুউচ্চ ঝরনার পানিতে গোসল করে নিতে পারেন। ক্লাউড ইকো রিসোর্ট -এ ভ্রমণ আপনার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় একটি ভ্রমণ হবে বলে আশা করি।

নোট: ভ্রমণের সময় যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না। পাড়ার লোকজনের অনুমতি ছাড়া তাদের ছবি তুলবেন না। নদীতে বা ঝরনায় সাবধানতা অবলম্বন করবেন।

“Clouds and clouds all over my mind
Searching for solace and peace to find
Not able to see the thoughts behind clouds
Wanted to run away and cry aloud
Where is the sky that was full of stars?
There is no heaven around amass
Tears are dwelling to shed all over
Where is life that got happiness in clover?
Tired like a evening flower
Ready to shed to the ground cover
I can hear the songs of distant hopes
But the distance is so far to rope
I can hear the messages of God
But the patience is draining abode
I can hear the faith shared around
But memories of sadness hound
Words that destroyed my peace
Failures that killed my own geese
I try to be normal and calm within
Yet, the turbulences’ do not disdain
The storms hitting the shores are high
The winds are blowing away my sky
God, give me the strength to fight
Or take me to your shores of might
Let me sleep in your lap to peace
If not to survive in this disdained freeze”

Follow us on

Subscribe and stay up to date.

BUY YOUR
HAMMOCK
NOW

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

ভয়ংকর শীতল সাতটি ভ্রমণ গন্তব্যভয়ংকর শীতল সাতটি ভ্রমণ গন্তব্য
ট্যুরিস্টের খাদ্য বন্য প্রাণীর মাংসট্যুরিস্টের খাদ্য বন্য প্রাণী

About the Author: Aoezora Zinnia

সহকারী অধ্যাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিকস এন্ড ফিস ব্রীডিং বিভাগে কর্মরত আওজোরা জিনিয়া ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন। একসময় প্রবাসী জীবন-যাপনে অভ্যস্ত জিনিয়া ঘুরে বেড়িয়েছেন অসংখ্য দেশ। পর্বতারোহণ নিয়েও রয়েছে তার দারুণ দারুণ সব স্বপ্ন। আর সেই পথ ধরেই তিনি ছিলেন মাউন্ট বাটুর, মাউন্ট ফুজি, মাউন্ট কানামো সহ বিভিন্ন পর্বতারোহণ অভিযানে। বনের সবুজ প্রকৃতি, পাহাড়, ঝিরি, ঝর্ণার প্রতি তীব্র ভালোবাসার টানে সুযোগ পেলেই ছুটে বেড়ান থেকে পাহাড়, প্রান্তর থেকে প্রান্তর, বুনোপথ থেকে বুনোপথে।

Sharing does not make you less important!

ভয়ংকর শীতল সাতটি ভ্রমণ গন্তব্যভয়ংকর শীতল সাতটি ভ্রমণ গন্তব্য
ট্যুরিস্টের খাদ্য বন্য প্রাণীর মাংসট্যুরিস্টের খাদ্য বন্য প্রাণী

Sharing does not make you less important!

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

ভয়ংকর শীতল সাতটি ভ্রমণ গন্তব্যভয়ংকর শীতল সাতটি ভ্রমণ গন্তব্য
ট্যুরিস্টের খাদ্য বন্য প্রাণীর মাংসট্যুরিস্টের খাদ্য বন্য প্রাণী

Sharing does not make you less important!

বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।

|Discussion

Leave A Comment

Related Posts and Articles

If you enjoyed reading this, then please explore our other post and articles below!

Related Posts and Articles

If you enjoyed reading this, then please explore our other post and articles below!

Related Posts and Articles

If you enjoyed reading this, then please explore our other post and articles below!