অ্যাডভেঞ্চার বা যে কোন অভিযানের পথে আপনার সবচেয়ে বড় বন্ধু হচ্ছে আপনার ব্যাকপ্যাকে থাকা নানান জিনিসপত্র এবং সরঞ্জামাদি। পাহাড়, পর্বত, অরণ্য কিংবা দ্বীপান্তর যেখানেই যান না কেন সেখানে কোথাও কারো সাহায্য পাওয়ার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই ধরে নিয়েই আপনার পথ চলতে হবে। এক গ্লাস জল থেকে শুরু করে চুড়ান্ত কোন বিপদের মুহুর্তেও আপনার পাশে এসে দাঁড়ানোর মত কাউকে খুঁজে না পাওয়ার এই প্রবল সম্ভাবনা থেকে উদ্ধারের একমাত্র উপায় হলো আপনার সাথে থাকা প্রয়োজনীয় রশদ। আর তাই যে কোন অভিযানের পূর্বে আপনার অভিযানের ধরণ অনুযায়ী সম্ভাব্য সকল সরঞ্জামের একটা তালিকা তৈরী করুন এবং অন্তত তিনবার আপনার প্যাকিং লিস্টের সাথে মিলিয়ে সমস্ত জিনিসপত্র আপনার ব্যাকপ্যাকে গুছিয়ে নিন।
আবারো বলছি, অ্যাডভেঞ্চার কিংবা যে কোন অভিযানে আপনার সাথে থাকা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলোই আপনার সুস্থভাবে বাড়ি ফিরে আসার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে। অতএব, আপনার দলের সদস্য সংখ্যা এবং অভিযানের রুট, প্রকৃতি, সময় এবং দুর্গমতা ইত্যাদি সবকিছুর সাথে সামঞ্জস্য রেখে আপনার ব্যাকপ্যাক গোছানোর চেষ্টা করুন। দলের সবার সাথে বারবার আলোচনা-পর্যালোচনা করে দেখে নিন, কোন কিছু বাদ পড়ে গেছে কি না।
এখানে অ্যাডভেঞ্চার বা অভিযানের পথে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির একটা খসড়া তালিকা দেয়া হলো। পরবর্তি অধ্যায়গুলোতে আমরা সে সকল জিনিসপত্র সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোচনা করবো।
EQUIPMENT
Sleeping Equipment (রাত্রিযাপনের সরঞ্জামাদি):
- টেন্ট বা তাবু: আপনার অভিযানের ধরণ তথা বৃষ্টি, তুষারপাত কিংবা বিরূপ আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাবু নির্বাচন করুন।
- স্লীপিং ব্যাগ বা কম্বল: অভিযানের প্রকৃতি, আবহাওয়া এবং অভিযানের ধরণের উপর ভিত্তি করে স্লীপিং ব্যাগ নির্বাচনে সচেষ্ট হোন।
- স্লীপিং ম্যাট বা ম্যাট্রেস: বাজারে নানা রকমের স্লীপিং ম্যাট পাওয়া যায়। যেকোন অভিযানের জন্য হালকা, উষ্ণতা ধরে রাখতে সক্ষম এবং আরামদায়ক ম্যাট পছন্দ করুন।
- পলিথিন বা প্লাস্টিক শীট: তাবুর নিচে বিছানোর জন্য কিংবা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তাবুর বাইরে ঢেকে রাখার জন্য দলের সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্লাস্টিক শীট রাখতে ভুলবেন না।
- এয়ার পিলো বা বালিশ: বালিশ ছাড়া ঘুমানোর অভ্যাস না থাকলে সাথে অবশ্যই এয়ার পিলো বা হাওয়া বালিশ রাখা জরুরী। যেহেতু এসব বালিশ খুব সহজেই ফুটো হয়ে যেতে পারে তাই অবশ্যই অতিরিক্ত একটা বালিশ সাথে রাখবেন।
Cooking Elements (রান্নার সরঞ্জাম):
- আগুন: জলরোধি কোন একটা বক্স বা ব্যাগে পর্যাপ্ত মোমবাতি, দিয়াশলাই, গ্যাস লাইটার যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করুন।
- জ্বালানী: যেখানে যাচ্ছেন সেখানে কাঠের বা লাকড়ির ব্যবস্থা আছে কিনা জেনে নিন অন্যথায় প্রয়োজনীয় পরিমান ছোট গ্যাস কন্টেইনার, পেট্রোল, কেরোসিন বা থিনার এর মত তরল জ্বালানী সাথে রাখুন।
- গ্যাস স্টোভ: অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্পিং কিংবা যে কোন অভিযানে সহজে বহনযোগ্য নানা ধরণের গ্যাস স্টোভ পাওয়া যায়। আপনার পছন্দ এবং বাজেট অনুযায়ী একটা ভাল গ্যাস স্টোভ সংগ্রহ করে নিন। এক্ষেত্রে মাল্টি ফুয়েল স্টোভ একটা দারুণ পছন্দ হতে পারে।
- কেরোসিন স্টোভ: গ্যাস স্টোভ না থাকলে কিংবা গ্যাসের খরচ কমাতে চাইলে কেরোসিন স্টোভ নিঃসন্দেহে একটা ভাল বিকল্প। সবচেয়ে বড় কথা হলো, কেরোসিন স্টোভ খুবই সহজলভ্য এমনকি যেকোন স্থানীয় বাজারে একটু ঘুরোঘুরি করলেই পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের স্টোভ।
- পেনি স্টোভ: কোকাকোলা, ডিওডোরেন্ট স্প্রে কিংবা বীয়ারের ক্যান কেটে অনায়াসে তৈরী করে ফেলা যায় পেনি স্টোভ এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে এক্ষেত্রে আপনার খরচের অংকটা একেবারেই শুন্য। বাজারে পাওয়া যায় এমন যেকোন তরল জ্বালানীর সাহায্যে জ্বালানো যায় এই পেনি স্টোভ তবে, বড় দলের জন্য রান্না করার ক্ষেত্রে পেনি স্টোভ বেশ অসুবিধাজনক বিধায় এটা শুধুমাত্র ব্যাকআপ হিসেবে সাথে রাখুন।
Kitchen Equipment (রান্নাঘরের টুকিটাকি):
- খাবার পরিবেশনের জন্য দলের সব সদস্যের নিজস্ব মেস-টিন বা প্লেট, গ্লাস, চামচ আছে কিনা দেখে নিন।
- দলের লোকসংখ্যার উপর ভিত্তি করে রান্না করার হাঁড়ি-পাতিল কিংবা কুকিং সেট সাথে রাখুন। এক্ষেত্রে অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি কুকিং সেট সবচেয়ে ভাল পছন্দ। এতে রান্না করতে সময় কম লাগে এবং ওজনে হাল্কা হওয়ায় এটি সহজে বহনযোগ্য।
- চা বা কফি তৈরির জন্য আলাদা একটা পাত্র সাথে রাখুন। যেকোন অভিযানে চা বা কফির গুরুত্ব অপরিসীম।
- রান্নার নানাবিধ কাজের সুবিধার্থে কিচেন নাইফ, বড় চামচ, ভেজিটেবল পীলার, টিন ওপেনার, চা ছাকুনি এবং গরম পাত্র স্থানান্তরের জন্য গ্লাভস বা টুকরো কাপড় সাথে রাখুন।
- রান্নার কাজে কিংবা খাওয়ার জল ধরে রাখা এবং সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমান বোতল এবং জেরী-ক্যান সাথে নিতে ভুলবেন না।
- রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়া তো হলোই এবার সব পরিস্কার করার পালা। অতএব, রান্নার সরঞ্জামের সাথে অবশ্যই যেকোন ক্লীনিং পাউডার অথবা সাবান রাখা জরুরী।
- “অভিযানের পরিকল্পনা”
- “অভিযানের পথে কি কি সাথে নেবেন?”
- “ক্যাম্পিংয়ের আদ্যোপান্ত“
- “তাবুর নাড়ি নক্ষত্র“
- “তাবু ছাড়াই তৈরি করুন শেল্টার“
- “অ্যাডভেঞ্চারে প্রয়োজনীয় নটস“
- “অভিযানে আপনার সাথে আগুন আছে তো!”
- “জলপান যেন বিষপান না হয়!”
- “অভিযানের পথে কি কি খাবার নিয়ে যাবেন!”
- পরবর্তি আউটডোর হ্যাকস্ –এর জন্য চোখ রাখুন Living with Forest –এর পাতায়।
Follow us on
Subscribe and stay up to date.
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।