আমি মূলত একজন ব্যর্থ গৃহী। ঘনিষ্ঠের অবহেলা আর অপমানের পীড়াদায়ক অভিজ্ঞতা আমাকে ঘর ছাড়তে বাধ্য করেছিল। অভিমানে আর না ফেরার প্রতিজ্ঞা নিয়ে ঘর ছেড়েছিলাম। চেয়েছিলাম ভোগ করব স্বাধীন সন্ন্যাসীর জীবন। মনে অনেক কিছুই চলছিল, কোথায় যাব, কার কাছে যাব।
পরিচিত অনেকের কাছে সাহায্য চাইলাম। বেশিরভাগ মহোদয়গণ আমাকে বিনয়াবনত হয়ে না করলেন। মনে পড়ল আমার কাজের অগ্রজ একজনের কথা। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থাকেন, নাম সেলিম। উনাকে ফোন করলাম, বললেন চলে এসো, এলে ব্যবস্থা একটা হবে। উনার নির্দেশনায় পৌঁছে গেলাম উনার বাসায়। উনি ভাবেননি বলা মাত্রই আমি যেতে রাজি হয়ে যাব তাই সমস্যায় পড়লেন হঠাৎ করে আসা অতিথিকে জায়গা দিবেন কোথায়।
সেই রাতটা আমাকে থাকতে দিলেন তার এক ছাত্রের বাসায়। নতুন জায়গা আর পরিবেশ দেখে ঠিকঠাক ঘুমোতে পারিনি। সেই ছাত্রের মুখে শুনলাম বাসার খুব কাছেই সমুদ্র। একথা জানার পর আমার আর তর সইছিলনা। দিনের আলো ফোটা মাত্র কোনো এক অদেখা প্রকৃতি দেখতে রওয়ানা হলাম। সামান্য হাঁটার পরেই দেখা পেলাম কাঙ্খিত সমুদ্র সৈকত, যেন তাকে দেখার জন্যই আমার এতদূর আসা। সেদিন বিকেলেও গেলাম সৈকতে, যেন নতুন প্রেমে পড়েছি।
কাজ শুরু করার পর একটু অবসর পেলে আমি বারবার চলে যেতাম সৈকতে। রাতে জোয়ারের সময়ও আমি বসে থাকতাম তীরে, নোঙর করা জাহাজগুলোকে ভাসমান শহর মনে হতো, আছড়ে পড়া ক্রমাগত উত্তাল কোনো এক ঢেউ আমাকে টেনে নিতে চাইত গভীর জলরাশিতে। কিছুদূরে বাঁধা মাছ ধরার নৌকো যেন ঘোড়সওয়ার। ভাটির সময় সকালবেলা তীর ঘেঁষে যখন হাঁটতাম, দেখতাম বালিতে ছোটছোট কাঁকড়া নিজেদের আড়াল করতে ব্যস্ত, বালি খুড়ে বের হওয়া আর ঢুকে যাওয়ার ব্যস্ততায় বালির উপর তৈরি হচ্ছিল নান্দনিক রেখা। কাছাকাছি দুয়েকটি ছোট পাখি ঘুরঘুর করে প্রাতরাশ সারছে। বিকেলের দিকে সমুদ্র যেন কোন তরুণীর মতো সাজে, অকল্পনীয় সৌন্দর্য নিয়ে হাজির হয়। ক্ষণেকে ক্যানভাসের রং পাল্টায় কোনো এক মানবীর চতুর হাসিতে। দিগন্তের সূর্য ব্যর্থ প্রেমিকের মতই বিদায় নিতে থাকে ধীরলয়ে। বহুবার পূর্ণিমা রাতেও তীরে বসে জোছনা গিলেছি, চাঁদের প্রতিবিম্ব পানিতে পড়ত, দেখতাম মাতাল জলরাশির বিস্মৃত আলোড়ন। সমুদ্র আমাকে আজও ডাকে সে ডাক আমি মাঝেমধ্যে শুনতে পাই। এখনও ঘুমের ভিতর দেখি, সমুদ্র তটে ভেজা নরম বালির উপর দিয়ে নগ্ন পায়ে হাঁটছি সন্ন্যাসী হয়ে।
লিখেছেনঃ মুহি উদ্দিন
Follow us on
Subscribe and stay up to date.
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।
বন, প্রকৃতির এবং পরিবেশের স্বার্থে বেড়াতে গিয়ে অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি এবং যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অপচনশীল যেকোন ধরনের আবর্জনা যেমন পলিব্যাগ, বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক প্যাকেট, যে কোন প্লাস্টিক এবং ধাতব দ্রব্য ইত্যাদি নিজেদের সাথে নিয়ে এসে উপযুক্তভাবে ধ্বংস করুন। এই পৃথিবীটা আমাদের অতএব, এ পৃথিবীটা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের।